বাক্‌ ১৪৮ ।। সৌরভ দত্ত


 

সার্কাসের তাঁবুর নিচে রাখা লোককথা

 

 

.

হারিয়ে যাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে কত স্মৃতিভার

তারাদের সম্বুক গতি

নিজস্ব গন্তব্যে একদিন ফেরাবেই ধুলো-আকাশ-মাটি

.

অন্ধকার, গর্ত থেকে বেরিয়ে এল নিজেই

ইঁদুরের মতো গৃহহীন--মায়াবী ধানের খেতে

.

কাকতাড়ুয়া স্বপ্ন দেখে

শূন্যতায় উড়ে,উড়ে...

তার ছেঁড়া প্যান্ট মধ্যরাতে কখনো চুল্লুখোর 

গিন্সবার্গের কবিতা হয়ে যায়

.

হ্রদের ধারে আমার সমস্ত থিওরি

গিলে নিচ্ছে একটা সোনা ব্যাঙ

সূর্যের মশকরা কেনো জানি না

ভেঙে দিলো সেই নির্নিমেষ কল্পসূত্র

.

গম্ভীরা নৃত্যরত বেহায়া রাজবংশী নারী

মহাদেবের ত্রিনয়নে যতটা ভয়ের মুখোশ

চৈত্রের বারবেলা নিয়ে আসে ঝাঁটাকালী

উড়ো পোকাদের সাথে আমি ততদূর যেতে পারি

.

ঘুষের টেবিলে দেখি মাথা পেতে শুয়ে আছে

হারামখোর নেতারা--অট্টহাসির চেয়ারে মেফিস্টো চুরিকাহত চারু মজুমদারের ডায়েরির পাতা

.

ঘুমের ভেতরে যদি ভ্রমক্রমে ঢুকে পড়ে

হত্যাকামী নদী--যাযাবর আলোছায়া গান

আমিও তো উঠে বসি শয়তানের ছদ্মবেশে

.

বন্দুকের নলে ফুটে ওঠে কাশ্মীরি কন্যার মুখ

মারণ অস্ত্রে মুখরিত ধাতব আশমান--

গাছেদের কাটা হাত থেকে পতনশীল রক্তের ফোঁটা

.

অনেকগুলো নাটবল্টুহীন মানুষ

বলগা হরিণের মতো ছুটছে--

পেরিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী নামক পিঙ্গল উপত্যকা

১০.

মধ্যাহ্ন দুপুরে পাখিরাও বন্ধু হয়ে যায়

কাজুবাদাম গাছের ঝোপে--চুম্বনস্বর

নেমে আসে হাজারো পাখিপাহাড়ের গল্প

১১.

অনেকটা এগিয়ে গেছি পিচ্ছিল  দর্পণে

গুহার ভিতরে আমাকে ঘিরে থাকে ব্যাঙ্কোর

প্রেতাত্মা--

ভয়ের অভিনয় করতে করতে কখনো

নিজেকে ম্যাকবেথ মনে হয়

১২.

জেলে পাড়ার নরেনের সামনে এক কৃষ্ণকাল

ক্ষুরের আঁঙটির ফাঁক দিয়ে মহাভারত দ্যাখে

ডুবন্ত রৌদ্র যেন খসে যাচ্ছে পাঞ্চালির আঁচলে

১৩.

মেঠো আলপথে নেমে আসে ক্ষয়িষ্ণু রেতরেখা

আদিবাসী যুবতির নাভির নিচে--শান্ত কুঠিঘর

হলুদ দোপাট্টায় মদির পলাশ পরবের ঘ্রাণ

১৪.

বাবার হন্যমান আধকানা চোখ

নস্যির কৌটোর বিজ্ঞাপনে আটকে--

আমি আজ হারিয়ে ফেলছি অন্তবর্তী ব্রেইলগুলো

১৫.

লেখা কেটে ফেললে পিঞ্জরে বৈরাগ্যের নদী

সে নদীর মোহনার মুখ তোলে এক পোয়াতি জিওল--

হারানো সময় তো স্রোতবপ্রবণ পাণ্ডুলিপি

 

No comments:

Post a Comment