বন্যা পরিস্থিতি
১
ওর মুক্তো এখনো কাঁচা। মুড়ি, চিঁড়ে,
আলু নিতে বালিকার চোখ যায় জামার সুনিপুণ এপ্লিকে। কেমন ব্যাঁকাচোরা
এক শরীর সাদা কালো খোল বাজায়, সে ছবি সেলাই করা। এরপর কর্তালের
মাঝের দড়ি ধরে সে ফিরে আসে। তার দুপাশে জল। তার দু'হাতে মুড়ি,
আলু, চিঁড়ে। ভারসাম্যহীন, খসে খসে পড়ছে
তার মুক্তো। তার মুক্তো, এখনো কাঁচা!
২
অদ্ভুত হাসি পায়! চারপাশে পা
তলানো জল। পায়ের পাতা, আঙুলে হাঁসের অভাব টের পায় মানুষ।
বুকের পাটা উল্টে লাল কানকো খুঁজতে মন চায়। একি দুর্বিষহ ইতিহাস, কে বলেছিল, জলেই প্রথম প্রাণ!
শেষও...
৩
যতটুকু আমি আছি, ততটুকুই
আমার পৃথিবী । এভাবেই বাঁটোয়ারা করা আছে বোধের ঘর। সে ঘরের বাইরে যা, সেটুকুতে পা রাখা কঠিন।
এক ঘর থেকে আর এক ঘরে যাও।
কড়া নাড়ো। জলের ফোঁটা ফোঁটা মিলে যতটুকু ভাষা, তার বাইরেও সভ্যতা আছে। সেখানে,
গোধূলিবেলায় আকাশের মধু চেটে নাও।
৪
সভ্যতার অগ্রগতি মানুষ
করেনা। সময় করে। তার এগিয়ে যাওয়া বা ঘুরতে থাকাই উন্নয়ন। মানুষ শুধু স্থান
পরিবর্তন করেছে। তার কাছে আস্ত গাছ কখনোই ফুলদানি হতে পারেনি!
৫
তোমায় যোগাযোগের অর্থ কি? যেখানে আস্ত
তুমিই রয়েছ আশ্চর্য ভরসায়, দিনে, রাতে,
অদেখায়। তবু তোমায় যোগাযোগের অর্থ কি? তোমায়
জানানো, আসলে তোমার অস্তিত্ব, তোমার
উপস্থিতির তোয়াক্কা করে না!
৬
হয়তো সেখানেও কবি ছিল কেউ।
জলের আঁচড়ে ভাবনা গোছাতে পারেনি। বুকজলে ছোট বোনকে কাঁধে নিয়ে ঘর ছেড়েছে সে। তার কবিতার
খাতা, আলগা অগোছালো পাতারা মণ্ড পাকাচ্ছিল স্রোতের গলায়।
এরপর চাঁদের দুধে পুষ্ট রাতে
সে ফিরে আসে। তার হাতে ছাঁকনি। সে ছাঁকনি সে জলে ডোবায়, তোলে। ডোবায়,
তোলে।
৭
এইসব তরলের ছাদে ভেসে ওঠা
কিছু, কিছু বা সবই, কোনোটাই পাতা হবেনা আর। যাকে পুড়িয়ে
ফেলা যায়, ছিঁড়ে ফেলা যায়। তবু বিলুপ্ত করা যায়না!
এসব তরলে ভেসেই থাকবে। তারপর
ডুবে যাবে, কোনো হিল্লোল ছাড়াই।
ওপর দেখে বুঝবে না কেউ, এক অজন্মা
পান্ডুলিপি ইথারে গলে গেছে।
No comments:
Post a Comment