বাক্‌ ১৪৮ ।। বিক্রম ঘোষ


 

বড়ো মাসি 

 


আমি দেখেছি আমার বড়ো মাসি'কে
সে সারাজীবন ধূ-ধূ বালুচর সংসারে
                                                    একটা উটের মতো
পিঠে কুঁজো নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে, একা একা,
বুকে জমছে পাথরের মতো নিঃসঙ্গ মেঘের হাহাকার

এত ধ্বনি-প্রতিধ্বনি সব মিথ্যা

শুধু দুঃখের নামে গজিয়ে উঠছে ক্যাকটাস
আশেপাশে, পায়ের তলায়


ওরা অনেকটা কাছাকাছি এসেছে অন্ধকার নিয়ে
আত্মীয় সবাই, বলছে- "তুমি বলো,
                       তুমি গতজন্মের আলোর কথা বলো"

যুদ্ধ সেই কবে থেমে গেছে
কালপুরুষের তরবারি খুলে পড়ে আছে লাল ধানখেতে
খয়েরি ঘোড়ার আস্তাবলে হ্রেষা শব্দ আজ প্রাগৈতিহাসিক
জোনাকিরা লজ্জায় মুখ ঢাকে পাতার শরীরে আর
অভিশাপ শঙ্খধ্বনির মতো আকাশে ভেসে আসে।
জ্যোৎস্নার ধারণা কিছুই নেই এখানে, এখানে ঘুম একমাত্র সনাতন

ওরা সবাই এসেছে অন্ধকার নিয়ে
গলায় বিষ ঢেলে বলছে- "বলো.... তুমি বলো"
যে অন্ধ সে শুধুই শুনলো, বোবা দেখলো
এবং যে বধির জন সে না বললো আর না কিছু শুনলো
সে সূর্যের অন্তিম হাত দিয়ে আগুন খুঁচিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লো বিষণ্ণতার পায়ে
দিকচক্রবাল ধরে উড়ে এলো সে এক তোতাপাখি
সেও কোন কথা বললো না,
কথা বলে উঠলো তার কাটা ঠোঁট

এখানে বড়ো মাসি কেউ নয়
                                  হয়তো বা সে সব কিছুই।

 

No comments:

Post a Comment