বাক্‌ ১৪৮ ।। অনিমেষ প্রাচ্য


 

দুঃখমদিরা

 

জীবনী দীর্ঘ হলে,— দুঃখ আরও অতিদূর রক্তিম হয়ে যায়। বর্ণ হয়, অন্তিম আশ্চর্যের। মাদিঘোড়ার ওই বিচ্ছুরিত অবস্থা দেখে, তোমার গর্ভাবস্থার কথা মনে পড়ে; তুমিও যদি বাতাসের কাছে এসে ঈশ্বরের

সাথে কথা কও, আমি ভুল বুঝে নিবোপ্রকৃতির

সাথে দ্বন্দ্ব উপস্থাপনাআরও ভয়ঙ্কর হয়ে যেতে পারে সেদিন।

এমনও হয়ে যেতে পারে, ঈশ্বরও নিঃশেষ হয়ে যাবে

ধরো।

 

আমি আমার দুঃখমদিরার কাছে ছুটি; কবিতার পথে একা হেঁটে যেতে, পৃথিবীর বিস্তৃত অভিশাপ পেতে হয়।

 

প্রকৃতপক্ষে সেই পৃথক জীবন আমার। অন্ধ আলেখ্য

এ জীবন।

 

 

 

 

ডোন্ট কিপ লাভ ইন ইওর হার্ট

 

পৃথিবীর ঘনীভূত শ্বাস- নিয়তঃ বৃদ্ধি পায়; পেতে চায়।

ভ্রমর ও ফুলের মাঝে যে অপারগ আত্মীয়তা তৈরি

হয়ে যায়,

এমন বন্ধনে বিপরীত অভিশাপ দিয়ে আকস্মিক ব্যর্থ হই, ব্যর্থ-ব্যর্থ অনুভব করি।

নৈশব্দ্যের প্রাঙ্গণে ছুটিচারিদিকে নেপথ্য শূয়রের

ডাক, ভালো লাগে না আমার।

 

বন্ধন দীর্ঘায়ু হলে, ভালোবাসা ছিন্ন হয়দুঃখ পেতে পেতে এইরূপ বিশ্বাসে উপনীত হই।

 

সূর্যের আলেখ্য হাসি তাপ প্রয়োগে তীব্র, তীব্রতর হয়।

বন্ধন ছেড়ে, একা থাকা ডাহুকের পথে আমি নিজেকে

আত্মলীন মনে করি।

আমাকে অতো স্ফীত প্রতারক প্রেম প্রদর্শনী দেখিও

না। কুকুরের যোনীর ভেতর ভোগ্যবস্তু হোক অভিভূত

ভালোবাসার হৃদয়।

 

ভালোবাসাকে হৃদয়ে রেখো না; ঝেড়ে ফেলো, ঝেড়ে ফেলো; তটস্থ হও আর স্নিগ্ধ রাত্রি।

 

 

 

একটি নিথর পড়ে আছে রাত্রি

 

একটি নিথর পড়ে আছে রাত্রি। পিয়ানো বাদকের নক্ষত্র চূর্ণ ব্যাধির মতো ম্লান, অ্যাবস্ট্রাক্ট মৃত্যুর

কথা কয়, আমার শব্দকে কে য্যানো শূন্য আর পাগল করে দিয়ে গেল। দুঃখ জন্মকে আরও বধির করে দিলো, ওহ ঈশ্বর!

 

আমি সেই শূন্যতার মাঝে শুয়ে থাকি আজীবন;

তুমি জানো? তুমি তো ওই পাতা ঝড়া নৈশব্দ্য নও। অস্তিত্বকে অস্বীকার করে, দূরে, বহুদূরে চলে গেলে

 

হী ন

তবু করে গেলে আমাকে; এ যেমন লাঞ্ছনার, এও অপারগ দুঃখের।

 

 

 

কার নামে নির্বাসন জ্বলে?

১১-ই জৈষ্ঠ্য, ১৪২৮

 

কার নামে নির্বাসন জ্বলে? জ্বালাও তুমি পুরোহিতহৃদয় শিখা! অনন্ত বিষ্ময় কাটিয়ে, ঘোর তপ্ত মেঘের মাঝে এই দ্যাখো পোড়া অন্ধকার, যুদ্ধবীথিকার দিকে কেবল চলে যাই অন্তর্লীন; শান দেয়া স্মৃতির গভীরে, মরীচিকা মরীচিকা মরীচিকা, লীন এই মরীচিকা বাহাদুরি।

 

প্রতিশ্রুত প্রাণ মোর, বেদনার ঘোরে, কি য্যানো জীর্ণকপর্দকভগ্ন কথা কয়।

 

অস্ফুট বাক্যের মাঝে হারিয়ে যাই, হারিয়ে যাই সপ্রতিভ

তুমি হৃদয় বিদীর্ণ করে চলে যাওয়া জীবন; সমুদ্রের গোপন উলঙ্গ পলাতক চিহ্ন

আশ্চর্য ভয়াতক দেবীকান্না জুড়ে আমার কিন্নরভর্তি জীবন, স্বপ্নলাঞ্ছিতকুকুরের আশায়, চারদিকে শুয়ে আছেশুয়ে আছে কোমলাষ্ঠ ছিঁড়ে। চেগিয়ে,

ঈশ্বরদাস ভর্তি অনাহত বার্বারিয়ান কৃষ্ণকায় কতিপয় মর্মাহত চাঁদ।

 

সপ্রতিভ, নির্বাসিতা, সপ্রতিভ করুণ গানগুলো আর গেয়ো না। ধর্মযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে, নিষ্প্রাণ ইহুদি-যবন পিণ্ডিকার মাঝে। তবু ভালোবাসার গান গেয়ো না!

 

এ-মর্মাহত জীবন, নির্বাসিতা এই মর্মাহত জীবন হারিয়ে যাক করুণ-মুমূর্ষু হৃদয়ের দ্বারে।

সপ্রতিভ,— সপ্রতিভ,— আমারে আর পোড়ায়ো না, এ-ভগ্নদশার ভাগাড়ে।

 

No comments:

Post a Comment